এ পাঠে যা রয়েছে-
জীবের শ্রেণীবিন্যাস
যে পদ্ধতিতে অসংখ্য বিচিত্র জীব প্রজাতিকে সহজে জানা যায় এবং বিভিন্ন দল উপদলে বিন্যাস করা যায় তাকে শ্রেণীবিন্যাস বা জীবের শ্রেণীবিন্যাস বলে ।
শ্রেনীবিন্যাসবিদ্যা
জীব বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের শ্রেণীবিন্যাস ও তার রীতিনীতি গুলো আলোচনা করা হয় তাকে শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বলে ।
শ্রেনীবিন্যাস বিদ্যার জনক
ক্যারোলাস লিনিয়াস প্রথম জীববিজ্ঞানের পূর্ণ শ্রেণীবিন্যাস নামকরণের ভিত্তি প্রবর্তন করেন তাই ক্যারোলাস লিনিয়াস কে জীববিদ্যার জনক বলা হয় ।
শ্রেনীবিন্যাসের উদ্দেশ্য
১. প্রতিটি জীবের দল-উপদল সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণ করা ।
২. আহরিত জ্ঞানকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা ।
৩. পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্ত ভাবে উপস্থাপন করা ।
৪. প্রতিটি জীবকে সনাক্ত করে তার নামকরণ ব্যবস্থা করা ।
জীবজগৎ
সুপার কিংডম-১
প্রোক্যারিওটা
রাজ্য-১ মনেরা
সুপার কিংডম-২
ইউক্যারিওটা
রাজ্য-২ প্রটিস্টা
রাজ্য-৩ ফানজাই
রাজ্য-৪ প্লান্টি
রাজ্য-৫ অ্যানিম্যালিয়া
সুপার কিংডম-১প্রোক্যারিওটা
যে সকল জীব এককোষী ,আণুবীক্ষণিক এবং যাদের সুগঠিত নিউক্লিয়াস নেই। সে সকল জীবকে প্রোক্যারিওটা বা আদিকোষী জীব বলে । যেমন ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ সবুজ শৈবাল ইত্যাদি।
সুপার কিংডম-২ ইউক্যারিওটা
যে সকল জীব এককোষী বা বহুকোষী, এককভাবে বা কলোনি আকারে দলবদ্ধভাবে বাস করে এবং যাদের সুগঠিত নিউক্লিয়াস আছে সে সকল জীবকে ইউক্যারিওটা প্রকৃতকোষী জীব বলে। যেমন- অ্যামিবা, মাশরুম, আম গাছ, মানুষ ইত্যাদি ।
রাজ্য-১ মনেরা
-
- এরা এককোষী।
- এরা ফিলামেন্টাস সুতার মতো এবং কলোনিয়াল।
- এদের কোষে নিউক্লিয়াস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই কিন্তু ক্রোমাটিন বস্তু থাকে।
- এদেরকে রাইবোজোম ছাড়া অন্যান্য কোষীয় অঙ্গানু নেই।
- দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়া এদের কোষ বিভাজিত হয়।
- এরা শোষণ পদ্ধতিতে খাদ্য গ্রহণ করে।
- এই রাজ্যের কিছু কিছু জীব সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করে ।
রাজ্য-২ প্রোটিস্টা
-
- এরা এককোষী ও বহুকোষী।
- এরা একক বা কলোনিয়াল বা ফিলামেন্টাস।
- এদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস আছে এবং ক্রোমাটিন বস্তু নিউক্লিয়ার পর্দা দ্বারা আবৃত।
- ক্রোমাটিন বস্তু তে ডিএনএ ,আরএনএ এবং প্রোটিন থাকে।
- এদের সকল কোষীয় অঙ্গানু বিদ্যমান।
- এরা শোষণ বা সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য গ্রহণ করে ।
- মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে এদের অযৌন প্রজনন ঘটে ।
- এদের গঠনগতভাবে একই রকম দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন হয়।
- এই রাজ্যের জীবদের কোন ভ্রূন গঠিত হয় না ।
রাজ্য-৩ ফানজাই
-
- এদের অধিকাংশই স্থলজ, মৃতজীবী বা পরজীবী ।
- দেহ এককোষী অথবা মাইসেলিয়াম দিয়ে গঠিত।
- এদের নিউক্লিয়াস সুগঠিত।
- এদের কোষপ্রাচীর কাইটিন বস্তু দিয়ে গঠিত।
- শোষণ পদ্ধতিতে এরা খাদ্য গ্রহণ করে।
- এদের কষে ক্লোরোপ্লাস্ট অনুপস্থিত।
- হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে এদের বংশ বৃদ্ধি ঘটে।
রাজ্য-৪ প্ল্যান্টি
-
- এরা প্রকৃত নিউক্লিয়াস যুক্ত সালোকসংশ্লেষণকারী উদ্ভিদ।
- এদের দেহে উন্নত টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান।
- এদের ভ্রুণ সৃষ্টি হয় এবং তা থেকে ডিপ্লয়েড পর্যায় শুরু হয়।
- এরা প্রধানত স্থলজ তবে অসংখ্য জলজ প্রজাতি ও রয়েছে।
- এদের যৌন জনন অ্যানাইসোগ্যামাস।
- এরা আর্কিগোনিয়েট এবং সপুষ্পক।
- এদের ভ্রূন সৃষ্টি হয়।
রাজ্য-৫ অ্যানিমেলিয়া
-
- এরা প্রকৃত নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট এবং বহুকোষী প্রাণী।
- এদের কোষে কোন জড় কোষ প্রাচীর প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর নেই।
- এরা পরভোজী।
- এরা খাদ্য গলাধঃকরণ করে।
- এদের দেহের জটিল টিস্যুতন্ত্র রয়েছে।
- এরা প্রধানত যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে।
- পরিণত ডিপ্লয়েড পুরুষ বা স্ত্রীর যৌনাঙ্গ থেকে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপন্ন হয়।
- ভ্রূন বিকাশ কালীন সময়ে ভ্রূনীয় স্তর সৃষ্টি হয় ।