এ পাঠে যা রয়েছে-
শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন ধাপ/একক
শ্রেণিবিন্যাসের একক
বিচিত্র জীব জগতকে সহজে জানার জন্য বিভিন্ন দল-উপদলে ধাপে ধাপে বিন্যস্ত করা হয় । এই ধাপগুলো কেই বলা হয় শ্রেণিবিন্যাসের একক ।
শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ/ একক মোট সাতটি যথা-
রাজ্য (Kingdom)
পর্ব (Phylum)
শ্রেণি (Class)
বর্গ (Order)
গোত্র (Family)
গণ (Genus)
প্রজাতি (Species)
নেস্টেড হায়ারার্কি
কোন জীবের শ্রেণীবিন্যাসের সাতটি ধাপ এর সবচেয়ে উপরের ধাপ হয় সবচেয়ে বড় এবং ক্রমান্বয়ে নিচের ধাপগুলো ছোট । সবচেয়ে উপরের ধাপ যদি হয় একটি সেট তবে তার নিচের ধাপ গুলো হবে তার উপসেট । যেমন- রাজ্যের উপসেট পর্ব, পর্বের উপসেট শ্রেণি,শ্রেণীর উপসেট বর্গ ইত্যাদি।শ্রেণিবিন্যাসের এই পদ্ধতিকে নেস্টেড হায়ারার্কি বলে।
মানুষের শ্রেণীবিন্যাসঃ
রাজ্য (Kingdom)– Animalia
পর্ব (Phylum)– Chordata
শ্রেণি (Class)- Mammalia
বর্গ (Order)– Primate
গোত্র (Family)– Hominidae
গণ (Genus)– Homo
প্রজাতি (Species) –Homo sapiens
দ্বিপদ নামকরণ
আই সি বি এন (ICBN)এর নীতিমালা অনুসারে একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জীবের জন্য দুটি পদ নিয়ে গঠিত একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করাকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ । এবং নামকরণের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় দ্বিপদ নামকরণ প্রক্রিয়া। এই বৈচিত্র্যময় জীব জগতের প্রতিটি জীবকে আলাদা নামে সঠিকভাবে জানাই হলো দ্বিপদ নামকরণ এর লক্ষ্য ।
ICBN
International Code of Botanical Nomenclature. ICBN এর নীতিমালা অনুসারেই প্রতিটি উদ্ভিদের দুটি পথ দিয়ে গঠিত বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করা হয় ।
ICZN
International Code of Zoological Nomenclature. ICZN এর নীতিমালা অনুসারেই প্রতিটি প্রাণীর দুটি পথ দিয়ে গঠিত বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করা হয় ।
দ্বিপদ নামকরণের জনক
সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস কে দ্বিপদ নামকরণের জনক বলা হয়। কারণ 1753 সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস Species Plantarum নামক বই রচনা ও প্রকাশনার মাধ্যমে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। তাই ক্যারোলাস লিনিয়াস কে দ্বিপদ নামকরণের জনক বলা হয় ।
Species Plantarum
দ্বিপদ নামকরনের পদ্ধতি প্রবর্তনকারী সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস 1953 সালে Species Plantarum নামক বইটি রচনা করে। এই বইটিতে সর্বপ্রথম দ্বিপদ নামকরণের পদ্ধতি ও নিয়মাবলী প্রকাশিত হয়। ফলে এই বইটি উদ্ভিদ বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা করে।
দ্বিপদ নামকরনের পদ্ধতি/ নিয়মাবলী
- প্রতিটি জীবের নামকরণ হবে ল্যাটিন ভাষায় কিংবা ল্যাটিন ভাষার মতো করে উপস্থাপন করতে হবে
- প্রতিটি জীবের বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম । যেমন-গণ (Genus)- Homo প্রজাতি (Species) –sapiens
- জীব জগতের প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নাম কে অনন্য হতে হয়, কারণ একই নাম দুটি পৃথক জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
- বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষরে হতে হবে বাকি অক্ষর গুলো ছোট অক্ষর হবে।এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে । যেমন -ধান Oryza sativa
- বৈজ্ঞানিক নাম ছাপা সময় সর্বদা ইতালি করে লিখতে হবে । যেমন- মানুষ- Homo sapiens
- বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লেখার সময় গণপ্রজাত নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে । যেমন- মানুষ- Homo sapiens
- যদি একই জীবের কয়েকজন বিজ্ঞানী বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে ।
- কোন জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম যিনি প্রথম দিবেন তার নাম উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে প্রকাশের সাল সহ সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে । যেমন- মানুষ- Homo sapiens L. 1758
কয়েকটি জীবের দ্বিপদ নাম-
পাট Corchorus capsularis
আম Mangifera indica
কাঁঠাল Artocarpus heterophyllus
শাপলা Nymphaea nuchali
ইলিশ Tenualosa ilisha
দোয়েল Copsychus saularis
কুনোব্যাঙ Bufo melanostictus
মৌমাছি Apis indica
জবা Hibiscus rosa-sinensis
রয়েল বেঙ্গল টাইগার Panthera tigris