জিনতত্ত্ব ও বিবর্তনের প্রাথমিক ধারন – ২য় পর্ব

জিনোটাইপ:

কোন জীবের লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী জিন যুগলের গঠনকে জিনোটাইপ বলে।যেমন- একটি লম্বা গাছের জিনোটাইপ হতে পারে TT বা Tt এবং খাটো  গাছের জিনোটাইপ হতে পারে tt।

ফিনোটাইপ:

কোন জীবের প্রকাশিত বৈশিষ্ট্যকে ফিনোটাইপ বলে। অর্থাৎ জিনোটাইপ বা জিনো গঠন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত জীবের বাহ্যিক লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য হলো ফিনোটাইপ। যেমন- একটি TT বা Tt  জিনোটাইপধারী উদ্ভিদের ফিনোটাইপ হতে পারে লম্বা অথবা tt জিনোটাইপ

প্যারেন্টাল জেনারেশন বা অপত্য বংশ: 

কোন ক্রসে বা প্রজননে ব্যবহৃত পিতা-মাতাকে ‘‘ভ্যালেন্টাইন জেনারেশন’’বা P1 এবং উৎপন্ন সন্তান-সন্ততির মধ্যে ক্রস করলে উৎপন্ন সন্তান-সন্ততিকে দ্বিতীয় অপত্য বংশ বা F2 জনু বলে।

শংকর জীব: 

বিপরীত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দুটি বিশুদ্ধ বা হোমোজাইগাস জীবের মধ্যে প্রজননের ফলে সৃষ্টি সন্তানদের সংকর জীব বলে। যেমন- বিশুদ্ধ বা হোমোজাইগাস লম্বা(TT) ও খাটো(tt) মটর গাছের মধ্যে ক্রস বা প্রজনন এর ফলে উৎপন্ন F1  জনুর জীব(Tt) হলো সংকর জীব।

এক সংকর বা মনোহাইব্রিড ক্রস:

জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যে সংকরায়ন বা ক্রস ঘটানো হয়, তাকে একসংকর ক্রসবা বা মনোহাইব্রিড ক্রস বলে। যেমন- লম্বা ও খাটো মটর গাছের মধ্যে ক্রসকে মনোহাইব্রিড ক্রস বলে। কারণ এখানে এক জোড়া বিপরীত ধর্মী বৈশিষ্ট্যের মধ্যে (লম্বা বা খাটো) ক্রস করা হয়েছে।

দ্বি-সংকর বা ডাইহাইব্রিড ক্রস:

জীবের দুই জোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যে সংকরায়ন বা ক্রস ঘটানো হয়, তাকে দ্বিসংকর ক্রস বা ডাইহাইব্রিড ক্রস বলে। যেমন- গোলাকার ও হলুদ বর্ণের মটর গাছের সাথে কুঞ্চিত ও সবুজ বর্ণের মটর গাছের মধ্যে ক্রসকে ডাইহাইব্রিড ক্রস বলে। কারণ এখানে দুইজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের মধ্যে (গোল-কুঞ্চিত আকার ও হলুদ সবুজ বর্ণ) ক্রস করা হয়েছে।

টেস্ট ক্রস:

F1 ও F2 জনুর বংশধরগুলো হোমোজাইগাস না হেটারোজাইগাস তা জানার জন্য সে গুলোকে মাতৃবংশের বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন লক্ষ বিশিষ্ট জিবের সাথে সংকরায়ন বা ক্রেস করাকে টেস্টাক্রস বলে। এভাবে এদের F1 ও F2 জনুর জিনোটাইপ বের করা যায়।

 সুতরাং, টেস্টক্রস= F1 জনুর বংশধর X প্রচ্ছন্ন বিশুদ্ধ মাতা।

 উদাহরণ-  মেন্ডেলের মটরসুটি গাছের উচ্চতা লম্বায ও খাটো বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরে নিয়ে টেস্টক্রসের ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো-

টেস্টক্রস

টেস্টক্রস

ধরি, মটর গাছের লম্বা বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী বিশুদ্ধ প্রকট জিন=TT এবং মটর গাছের খাটো বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন জিন=tt

ব্যাকক্রস:

F1 জনুর একটি হেটারোজাইগাস বংশধর বা জিবের সাথে তার পিতৃ-মাতৃবংশীয় যেকোন এক সদস্যের (প্রেকট বা প্রচ্ছন্ন)  সাথে ক্রস বা সংকরায়ন করাকে ব্যাক ক্রস বলে।

সুতরাং, ব্যাক ক্রস= F1 জনুর বংশধর X প্রকট বা প্রচ্ছন্ন পিতা-মাতা উদাহরণ: গিনিপিগের বর্ণকে কালো ও বাদামি বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরে নিয়ে ব্যাক ক্রস ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো-

ব্যাকক্রস

ব্যাকক্রস

 ধরি, গিনিপিগের কালো বর্ণ বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী বিশুদ্ধ প্রকট জিন=BB এবং গিনিপিগের বাদামি বর্ণ বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন জিন=bb 

জিনোম:

জীবের একটি জননকোষের ক্রোমোসোমে  বিদ্যমান জিনে সৃষ্টিকে জিনোম বলে।

 

 

এই অধ্যায়ের অন্যান্য পোষ্টসমূহ-

>> জিনতত্ত্ব ও বিবর্তনের প্রাথমিক ধারন