বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ হরমোন- সাইটোকাইনিন, ইথিলিন

বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ হরমোন- সাইটোকাইনিন, ইথিলিন

সাইটোকাইনিন

উদ্ভিদের ফল ও শস্যে উৎপন্ন যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ কোষ বিভাজন কে উদ্দীপ্ত করে তাকে সাইটোকাইনিন বলে । শস্যে, ফলে, ডাবের পানিতে , কোন কোন উদ্ভিদের মূলে ও এদের পাওয়া যায় ।

সাইটোকাইনিন এর কাজঃ

১.  সাইটোকাইনিন উদ্ভিদের কোষ বিভাজনের সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।

২.  উদ্ভিদের কোষর বৃদ্ধি ঘটায়।

৩. এটি উদ্ভিদের বার্ধক্য বিলম্বিত করণে ভূমিকা পালন করে।

৪. উদ্ভিদের বিভিন্ন অঙ্গের বিকাশ সাধন, বীজ ও অঙ্গের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গকরণে ভূমিকা রাখে। 

সাইটোকাইনিন এর ব্যবহারঃ

১.  উদ্ভিদের বীজ ও অঙ্গের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গকরণে এটি ব্যবহার করা হয় ।

২. উদ্ভিদের কোষের বৃদ্ধি সহ গাছের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে এটি ব্যবহার করা হয়। 

ইথিলিন

গ্যাসীয় অবস্থায় বিরাজমান যে সকল জৈব রাসায়নিক পদার্থ ফল পাকাতে সাহায্য করে তাকে ইথিলিন বলে। এই হরমোন ফল, ফুল, বীজ,  পাতা এবং মূলেও দেখা যায়।

ইথিলিনের কাজঃ

১. ইথিলিন এবং মুকুলের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে।

২. চারা গাছের কান্ডের বৃদ্ধি ঘটিয়ে চারাগাছকে লম্বা হতে সাহায্য করে।

৩.  ফুল ও ফল সৃষ্টির সূচনা করে।

৪.  পাতা, ফুল ও  ফুলের ঝরে পড়া ত্বরান্বিত করে।

৫.  ফল পাকাতে সাহায্য করে। 

ইথিলিন এর ব্যবহারঃ

১.  কৃত্রিম উপায়ে ফল পাকাতে ইথিলিনের বহুল ব্যবহার রয়েছে।

২. উদ্ভিদের ফুল ও ফল সৃষ্টিতে এর কৃত্রিম ব্যবহার রয়েছে। 

অভিকর্ষ উপলব্ধিঃ

ভ্রূনমূল বা ভ্রূনকান্ডের অগ্রভাগের অংশ অভিকর্ষের যে উদ্দীপনা অনুভব করে তাকে অভিকর্ষ উপলব্ধি বলে ।এর ফলে অভিকর্ষনীয় চলন দেখা যায়।

জৈবিক ঘড়িঃ

উদ্ভিদের আলো-অন্ধকারের ছন্দকে জৈবিক ঘড়ি বায়োলজিক্যাল ক্লক বলে। উদ্ভিদের আলো-অন্ধকারের ছন্দের উপর ভিত্তি করে পুষ্পধারা উদ্ভিদ কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- 

১. ছোট দিনের উদ্ভিদঃ

যে সকল উদ্ভিদের পুষ্পায়নে দৈনিক গড়ে ৮-১২ ঘন্টা আলো প্রয়োজন হয় সে সকল উদ্ভিদ কে ছোট দিনের উদ্ভিদ বলে। দীর্ঘ আলোক এসব উদ্ভিদের পুষ্প উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। যেমন- চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া ইত্যাদি ।

২.বড় দিনের উদ্ভিদঃ

যে সকল উদ্ভিদের পুষ্পায়নে  দৈনিক গড়ে 12 থেকে 16 ঘণ্টা আলোর প্রয়োজন হয়, সেসকল উদ্ভিদকে বড়দিনের উদ্ভিদ বলে । স্বল্প সময়ের আলোকে সব উদ্ভিদের পুষ্প উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। যেমন – লেটুস, ঝিঙ্গা ইত্যাদি।

৩.আলোক নিরপেক্ষ উদ্ভিদঃ

 যে সকল উদ্ভিদ এর পুষ্পায়নে দিনের আলো কোন প্রভাব ফেলে না, তাদেরকে আলোক নিরপেক্ষ উদ্ভিদ বলে। যেমন -শসা, সূর্যমুখী ইত্যাদি। 

ভার্নালাইজেশনঃ

শৈত্য প্রদানের মাধ্যমে উদ্ভিদের ফুল ধারণ ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়াকে ভার্নালাইজেশন বলে। উদ্ভিদের পুষ্প সৃষ্টিতে উষ্ণতার প্রভাব পড়ে, শীতের গরম গরম কালে লাগালে ফুল আসতে বহু দেরি হয়, কিন্তু বীজ রোপণের পূর্বে 2 ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে 5 ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতায় প্রয়োগ করলে উদ্ভিদে পুষ্প পরিস্ফুটন ঘটে। 

উদ্ভিদে চলনঃ

অভ্যন্তরীণ বহি-উদ্দীপক উদ্ভিদদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি করার ফলে কোন নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির থেকে উদ্ভিদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন কে চলন বলে । উদ্ভিদের চলনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়- সামগ্রিক চলন ও বক্র চলন।

সামগ্রিক চলনঃ

উদ্ভিদ দেহে কোন অংশ যখন সামগ্রিকভাবে প্রয়োজনের তাগিদে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে তাকে সামগ্রিক চলন বলে ।যেমন ছত্রাক এবং উন্নত উদ্ভিদের যৌন জনন কোষে কিংবা জুস্পোরে ধরনের চলন দেখা যায়। 

বক্র চলনঃ

মাটিতে আবদ্ধ উন্নত শ্রেণীর উদ্ভিদ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল করতে পারে না তাই তাদের অঙ্গগুলো নানাভাবে বেঁকে যায়, এ ধরনের চলন কে বক্র চলন বলে। যেমন কাণ্ডের আলোক মুখী চলন, মূলের অন্ধকার মুখে চলন ইত্যাদি। 

এ অধ্যায়ের অন্যন্য পাঠসমূহ-
১. বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ হরমোন-অক্সিন ও জিবেরেলিন

Rabaya Bashri: Rabaya Bashri is a Lecturer with 14 years of teaching experience in biological science. Just after complete her M.Sc (Botany) she joined teaching profession. Having First Class all through her educational life she never seek for other job. She served most renowned school and colleges in Dhaka and Narayangonj city.