ফুসফুসের গঠন ও অক্সিজেন শোষন

ফুসফুসের-গঠন-ও-অক্সিজেন-শোষন

ফুসফুসের গঠন ও অক্সিজেন শোষন

 শ্বসনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গের গঠন কী রূপ ? 

 ফুসফুস শ্বসনতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ। বক্ষগহ্বরের ভিতর হৃদপিন্ডের দুই পাশে দুটি ফুসফুস অবস্থিত। এটি স্পঞ্জের মতো নরম এবং কোমল, হালকা লালচে রঙের। ডান ফুসফুস তিন খণ্ডে এবং বাম ফুসফুস দুই খণ্ডে বিভক্ত। ফুসফুস দুই ভাঁজবিশিষ্ট প্লুরা নামক পর্দা দিয়ে আবৃত। দুই ভাঁজের মধ্যে এক প্রকার রস নির্গত হয়। ফলে শ্বাসক্রিয়া চলার সময় ফুসফুসের সাথে বক্ষগাত্রের কোনো ঘর্ষণ হয় না। ফুসফুসে অসংখ্য বায়ুথলি, রক্তনালী ও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম   শ্বাসনালী থাকে। বায়ুথলিগুলোকে বলে অ্যালভিওলাস। বায়ুথলিগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুক্লোম শাখাপ্রান্তে মৌচাকের মত অবস্থিত।

ফুসফুসের-গঠন

নাসাপথ দিয়ে বায়ু সরাসরি বায়ুথলিতে যাতায়াত করতে পারে। বায়ুথলি পাতলা আবরণ দিয়ে আবৃত কৈমিকনালিকা দিয়ে পরিবেষ্টিত। বায়ু প্রবেশ করলে এগুলো আপনা আপনি ফুলে ও সংকুচিত হয়। বায়ুথলি ও কৈশিক নালিকা গাত্র এত পাতলা যে এর ভিতর দিয়ে গ্যাসীয় আদান-প্রদান ঘটে। 

জীবে (মানব) গ্যাসীয় বিনিময় কিভাবে হয় ?

গ্যাসীয় বিনিময়ে বলতে O2 ও CO2 এর বিনিময়কে বোঝায়। মানুষে এটি মূলত বায়ু ও ফুসফুসের রক্তনালির ভিতরে ঘটে এবং ব্যাপন প্রক্রিয়ায় ঘটে। গ্যাসীয় বিনিময় দুটি পর্যায়ে ঘটে। যথা- অক্সিজেন শোষণ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ। 

অক্সিজেন শোষণ:

ফুসফুসের অ্যালভিওলাস ও রক্তের চাপের পার্থক্যের জন্য O2 ব্যাপন প্রক্রিয়ায় রক্তে প্রবেশ করে। ফুসফুস থেকে ধমনির রক্তে O2 প্রবেশের পর রক্তে O2 দুইভাবে পরিবাহিত হয়।

১) সামান্য পরিমাণ O2 রক্ত রক্তরসে  দ্রবীভূত হয়ে পরিবাহিত হয়। 

২) বেশির ভাগ O2 হিমোগ্লোবিনের লৌহ অংশের সাথে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন নামে একটি অস্থায়ী যৌগ গঠন করে। যা থেকে অক্সিজেন সহজেই বিচ্ছিন্ন হতে পারে।

 হিমোগ্লোবিন+ অক্সিজেন————> অক্সিহিমোগ্লোবিন( অস্থায়ী যৌগ)

      অক্সিহিমোগ্লোবিন————>  মুক্ত অক্সিজেন+ হিমোগ্লোবিন
 এভাবে রক্ত কৈশিকনালিতে পৌঁছার পর O2 পৃথক হয়ে প্রথমে লোহিত রক্তকণিকার আবরণ ও পরে কৌশিকনালী প্রাচীর ভেদ করে লসিকাতে প্রবেশ করে। অবশেষে O2  লসিকা থেকে কোষ আবরণ ভেদ করে কোষে পৌঁছে।

কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ:

খাদ্য জারন বিক্রিয়ায় কোষে CO2 তৈরি করে। এই CO2 প্রথমে কোষ আবরণ ভেদ করে লসিকাতে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে কৈশিকনালীর প্রাচীর ভেদ করে রক্তরসে প্রবেশ করে। CO2 প্রধানত সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) রূপে রক্তরসের মাধ্যমে এবং পটাশিয়াম বাই কার্বোনেট (KHCO3) রূপে লোহিত রক্তকণিকা দিয়ে পরিবাহিত হয়ে ফুসফুসে আসে। এরপর কৈশিকনালি ও বায়ুথলি বা অ্যালভিওলাস ভেদ করে দেহের বাইরে নির্গত হয়।

অক্সিজেন-শোষনের-ও-কার্বন-ডাই-অক্সাইড-ত্যাগের-প্রবাহ-চিত্র

এ অধ্যায়ের অন্যান্য পাঠসমূহ-

>উদ্ভিদে গ্যাসীয় বিনিময়

>মানব শ্বসনতন্ত্র

Rabaya Bashri: Rabaya Bashri is a Lecturer with 14 years of teaching experience in biological science. Just after complete her M.Sc (Botany) she joined teaching profession. Having First Class all through her educational life she never seek for other job. She served most renowned school and colleges in Dhaka and Narayangonj city.