পাকস্থলীতে খাদ্য পরিপাক

পাকস্থিলীতে-খাদ্য-পরিপাক

পাকস্থলীতে খাদ্য পরিপাক 

পাকস্থলীতে খাদ্য পরিপাক 

আমরা যেসব খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করি তা মুখগহ্বর থেকে পেরিস্টালসিস প্রক্রিয়ায় অন্ন নালীর মধ্যে দিয়ে পাকস্থলীতে প্রবেশ করে ।পাকস্থলীতে খাদ্য আসার পর অন্তঃপ্রাচীর এ গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি থেকে গ্যাস্ট্রিক রস ক্ষরিত হয়। এই রসের দুইটি প্রধান উপাদান থাকে।  যথা- হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ও পেপসিন। 

হাইড্রোক্লোরিক এসিড খাদ্যের মধ্যে কোন অনিষ্টকারী ব্যাকটেরিয়া থাকলে তা মেরে ফেলে, নিষ্ক্রিয় পেপসিনোজেনকে সক্রিয় পেপসিন এ পরিণত করে এবং পাকস্থলীর পেপসিন এর সুষ্ঠু কাজের জন্য অম্লীয় পরিবেশের সৃষ্টি করে।

নিষ্ক্রিয় পেপসিনোজেন →HCL→    সক্রিয় পেপসিন 

পেপসিন এক ধরনের এনজাইম যা আমিষকে ভেঙ্গের দুই বা ততোধিক অ্যামাইনো এসিড দিয়ে তৈরি যৌগ গঠন করে, যা পলিপেপটাইড নামে পরিচিত।

আমিষ→পেপসিন→  পলিপেপটাইড 

পাকস্থলীতে খাদ্য দ্রব্য পৌঁছানো মাত্র হাইড্রোক্লোরিক এসিড ও পেপসিন রস গুলো নিঃসৃত হয়। পাকস্থলীর অনবরত সংকোচন অপসারণ এবং এনজাইমের ক্রিয়ার ফলে খাদ্য মিশ্র মন্ডে পরিণত হয়। একে পাকমন্ড বা কাইম বলে। এই মন্ডল অনেকটা সুপের মত এবং কপাটিকা ভেদ করে ক্ষুদ্রান্ত প্রবেশ করে। 

মুখ গহবরে কোন খাদ্য উপাদান টি পরিপাক হয়?

মুখ গহবরে শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদান টি পরিপাক হয়। মুখের অভ্যন্তরে দাঁত, জিহ্বা ও লালা গ্রন্থি থাকে। মোহাব্বাতে অবস্থিত লালা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালারসে টায়ালিন ও মলটেজ নামক এনজাইম শর্করা পরিপাকে অংশ নেয়। দাঁত খাদ্যকে ছোট ছোট খন্ডে পরিণত করে আর জিহ্বা খাবার খেয়ে উল্টে পাল্টে দেয়। মুখগহ্বরে আমিষ স্নেহ জাতীয় খাদ্যের কোনরূপ পরিবর্তন হয় না। 

শর্করা ও স্নেহ জাতীয় খাদ্য পাকস্থলীতে পরিপাক হয় না কেন?

পাকস্থলীতে খাবার পরিপাকের জন্য হাইড্রোক্লোরিক এসিড ও পেপসিন নামক এনজাইম নিঃসৃত হয়। এসব এনজাইম আমিষ জাতীয় খাদ্য কে ভেঙ্গে পলিপেপটাইড এ পরিণত হয়। কিছু শর্করা এবং স্নেহ জাতীয় খাদ্য সাধারণত পাকস্থলীতে পরিপাক হয় না। কারণ শর্করা ও স্নেহজাতীয় খাদ্য পরিপাকের জন্য পাকস্থলীতে কোন এনজাইম থাকে না। 

মৌল বিপাক কি?

বিশ্রাম অবস্থায় আমাদের দেহের আভ্যন্তরীণ অঙ্গাণু গুলো ক্রিয়ারত থাকে এবং এর জন্য কিছু শক্তি ব্যয় হয়। একে মৌল বিপাক বলে ।

ক্ষুদ্রান্তে খাদ্যের পরিপাক

ক্ষুদ্রান্তে খাদ্যের পরিপাক

পাকস্থলী থেকে পাকমন্ড ক্ষুদ্রান্তের ডিওডেনামে প্রবেশ করে। এসময় অগ্নাশয় থেকে একটি ক্ষারীয় পাচকরস ডিওডেনামে আসে, এই পাচকরস খাদ্য মন্ডের অম্লাভাব প্রশমিত করে। পাচক রসের এনজাইম দিয়ে শর্করা এবং আমিষ পরিপাক এর কাজ চলতে থাকে এবং স্নেহ পদার্থের পরিপাক শুরু হয়। 

স্নেহ বিশ্লেষক লাইপেজ স্নেহপদার্থ কে ভেঙে ফ্যাটি এসিড এবং গ্লিসারল পরিণত করে।

স্নেহপদার্থ→লাইপেজ→ফ্যাটি এসিড+ গ্লিসারোল 

আংশিক পরিপাককৃত আমিষ ক্ষুদ্রান্তের ট্রিপসিন এর সাহায্যে ভেঙে অ্যামাইনো এসিড এবং সরল পেপটাইড এ পরিণত হয় ।

পলিপেপটাইড→ট্রিপসিন→ অ্যামাইনো এসিড+ সরল পেপটাইড

অ্যামাইলেজ শ্বেতসারকে সরল শর্করার পরিণত করে।

শ্বেতসার→ অ্যামাইলেজ→গ্লুকোজ

ক্ষুদ্রান্তে সব ধরনের খাদ্যই সম্পূর্ণভাবে নির্দিষ্ট এনজাইম ক্রিয়ার পরিপাক  হয়ে সরল, শোষণ যোগ্য উপাদানের পরিবর্তিত হয়।

কাইম কি?

পাকস্থলীর অনবরত সংকোচন অপসারণ এবং এনজাইম ক্রিয়ার ফলে খাদ্য মিশ্র মন্ডে পরিণত হয়, সেটাকে কােইম বা পাকমন্ড বলে ।

 

এ অধ্যায়ের অন্যান্য পাঠ-

# উদ্ভিদের পুষ্টিতে বিভিন্ন খনিজ উপাদানের ভূমিকা

# খাদ্য উপাদান

খাদ্য উপাদান-খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, খনিজ লবণ,পানি ও খাদ্যআঁশ বা রাফেজ

পুষ্টির অভাবজনিত রোগ সমূহ

# ক্যালরি ও ক্যালরি নির্ণয়

# BMR ও BMI নির্নয়

# খাদ্য সংরক্ষন ও খাদ্যে ভেজাল

# দাঁতের গঠন

# যকৃত ও অগ্নাশয়

Rabaya Bashri: Rabaya Bashri is a Lecturer with 14 years of teaching experience in biological science. Just after complete her M.Sc (Botany) she joined teaching profession. Having First Class all through her educational life she never seek for other job. She served most renowned school and colleges in Dhaka and Narayangonj city.