এ পাঠে যা রয়েছে-
অসমোরেগুলেশন ও বৃ্ক্কে পাথর
অসমোরেগুলেশন:
মানবদেহের অভ্যন্তরে কোষকলায় বিদ্যমান পানি ও বিভিন্ন লবণের ভারসাম্য রক্ষা কৌশলকে অসমোরেগুলেশন বলে।
যাবতীয় শারীরবৃত্তিক কাজ সম্পাদনের জন্য মানবদেহে পরিমিত পানি থাকা অপরিহার্য। মূলতঃ মূত্রের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি পানি দেহ থেকে বের হয়ে যায়। দেহের পানিসাম্য নিয়ন্ত্রণে বৃক্ক প্রধান ভূমিকা পালন করে। কোন কারনে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বৃক্ক নেফ্রনের মাধ্যমে পুনঃশোষণ প্রক্রিয়ায় বেশি পরিমাণে মূত্র উৎপন্ন করে। আবার দেহে পানির পরিমাণ কমে গেলে বৃক্কের নেফ্রন পুনঃশোষণ প্রক্রিয়া কমিয়ে কম পরিমাণে মূত্র উৎপন্ন করে। বৃক্কের এইভাবে পানির সাম্যতা বজায় রাখার প্রক্রিয়াই হলো অসমোরেগুলেশন। আর এভাবেই বৃক্ক অসমোরেগুলেশনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
বৃক্কের রোগ:
নানারকম রোগের কারণে বৃক্ক বা কিডনির স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটে। যেমন- বৃক্কে পাথর ও বৃক্ষ বিকল।
বৃক্কের রোগের লক্ষণ:
১.শরীর ফুলে যাওয়া ও চোখ- মুখ ফুলে যাওয়া।
২. প্রস্রাবের সাথে রক্ত ও অতিরিক্ত প্রোটিন যাওয়া এবং ক্রিয়েটিনিন বৃদ্ধি পাওয়া।
৩.প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করা ও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
৪. ক্ষেত্র বিশেষে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া বা কম হওয়া।
৫. নেফ্রাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিও বৃক্ক রোগের লক্ষণ।
বৃক্কে পাথর:
মানুষের বৃক্কে বা কিডনিতে ছোট আকারের পাথর হওয়াকেই বৃক্ক পাথর বলে। বৃক্কে পাথর সবারই হতে পারে। তবে মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের বৃক্কে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
বৃক্কে পাথর হওয়ার কারণ:
১.অতিরিক্ত শারীরিক ওজন।
২. বৃক্কে সংক্রমণ।
৩. কম পানি পান করা।
বৃক্কে পাথর এর লক্ষণ:
বৃক্কে পাথর হলে তেমন লক্ষণ ধরা পড়ে না। সমস্যা হয় যখন পাথর প্রস্রাব নালীতে চলে আসে।
১. প্রস্রাবে বাধা হয়।
২. কোমরের পিছনে ব্যথা হয়।
৩. প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হয়।
৪. অনেক সময় কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে।
বৃক্কে পাথর এর চিকিৎসা:
বৃক্কে পাথর হলে তার চিকিৎসা নির্ভর করে পাথরের আকার ও অবস্থানের উপর। সাধারণত অধিক পানি গ্রহণ ও ঔষধ সেবনের পাথর অপসারণ করা যায়। আধুনিক পদ্ধতিতে ইউরেটারোস্কেপিক কিংবা আলট্রাসনিক লিথট্রিপসি বা বৃক্কে অস্ত্রোপচার করে পাথর অপসারণ করা যায়।
এ অধ্যায়ের অন্যান্য পাঠসমূহঃ