রেচনের প্রাথমিক ধারনা ও বৃক্কের গঠন

রেচনের প্রাথমিক ধারনা

রেচন

যে জৈবিক প্রক্রিয়া মানবদেহে বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থগুলো বের হয়ে যায় তাকে রেচন বলে।

রেচনতন্ত্র

যে তন্ত্রের মাধ্যমে মানবদেহের বিষাক্ত ও নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয়, তাকে রেচনতন্ত্র বলে।

রেচন অঙ্গ

যে অঙ্গের মাধ্যমে রক্ত হতে বিষাক্ত ও নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য গুলোকে পৃথক করা হয় তাকে রেচন অঙ্গ বলে। মানবদেহের রেচনঅঙ্গ হল বৃক্ষ বা কিডনি।

রেচন পদার্থ

মানবদেহে বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে যে সকল নাইট্রোজেন ঘটিত বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় তাকে রেচন পদার্থ বলে। এই রেচন পদার্থ গুলো দেহ হতে মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। আ মূত্রের প্রায় ৯০ ভাগই পানি। এছাড়াও মূত্রে রেচন পদার্থ হিসেবে থাকে ইউরিয়া, ইউরিক অ্যাসিড, ক্রিয়েটিনিন ও বিভিন্ন ধরনের লবণ।

মূত্র

মানবদেহের রেচন পদার্থগুলো যার মাধ্যমে শরীর বা দেহ হতে বের হয়ে যায় তাকে মূত্র বলে। মূত্রের প্রায় ৯০ ভাগ উপাদানই হচ্ছে পানি।

মূত্রের রং

রেচন পদার্থগুলো মূত্রের থাকে। রেচন পদার্থ ছাড়া ও মূত্রে ইউরোক্রোম নামে এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ উপস্থিত থাকে। আর এই ইউরোক্রোম এর উপস্থিতিতেই মূত্রের রং হালকা হলুদ হয়।

মূত্রের অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব

আমিষ- জাতীয় খাবার খেলে মূত্রের অম্লত্ব বৃদ্ধি পায় আবার ফলমূল ও তরিতরকারি খেলে সাধারণত ক্ষারীয় মূত্র তৈরি হয়।

বৃক্ক

মানবদেহের রেচন অঙ্গকে বলা হয় বৃক্ক। বৃক্কের একক হলো নেফ্রন। মানবদেহের বৃক্ক দুইটি এবং এর আকার শিমবিচির মতো ও রং লাল।

বৃক্কের অবস্থান

মানবদেহের উদরগহবরের পিছনের অংশে। মেরুদন্ডের দুই দুদিকে বক্ষপিঞ্জরের নিচে পিঠ- সংলগ্ন অবস্থায় দুটি বৃক্ক অবস্থান করে।

বৃক্কের গঠন

বৃক্ক লালচে রং এর শিমবিচির মতো। বৃক্কের বাইরের পার্শ্ব উত্তল এবং ভিতরের পার্শ্ব অবতল। বৃক্কের অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাস বলে। হাইলাসের ভিতর থেকে ইউরেটার এবং রেনাল শিরা বের হয় এবং রেনাল ধমনী বৃক্কে প্রবেশ করে। দুটি বৃক্ক থেকে দুটি ইউরেটর বের হয়ে মূত্রাশয় প্রবেশ করে। ইউরেটারের ফানেল আকৃতি অংশকে রেনাল পেলভিস বলে। বৃক্ক সম্পূর্ণরূপে এক ধরনের তন্তুময়

বৃক্কের গঠন

বৃক্কের গঠন

আবরণ দিয়ে বেষ্টিত থাকে, একে রেনাল ক্যাপসুল বলে। ক্যাপসুল-সংলগ্ন অংশকে কর্টেক্স এবং ভিতরের অংশকে মেডুলা বলে। মেডুলায় সাধারণত ৮-১২টি রেনাল পিরামিড থাকে। রেনাল পিরামিডের অগ্রভাগ প্রসারিত হয়ে রেনাল প্যাপিলা গঠন করে। এসব প্যাপিলা সরাসরি পেলভিসে উন্মুক্ত হয়। বৃক্কে বিশেষ এক ধরনের নালিকা থাকে যাকে ইউরিনিফেরাস নালিকা বলে। প্রতিটি ইউরিনিফেরাস নালিকা দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত। যথা- নেফ্রন ও সংগ্রাহী নালিকা। নেফ্রন মূত্র তৈরি করে আর সংগ্রাহী নালিকা পেলভিসে মূত্র বহন করে।