সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির গঠন, টেনডন, অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট ও পেশীতন্ত্র

সাইনোভিয়াল--অস্থিসন্ধির-গঠন

সাইনোভিয়াল  অস্থিসন্ধির গঠন, টেনডন, অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট  ও পেশীতন্ত্র

সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির গঠন

সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি মূলত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা-

ক) তরুণাস্থি

খ) সাইনোভিয়াল রস

 গ) ক্যাপসুল 

সাইনোভিয়াল–অস্থিসন্ধির-গঠন

ক) তরুণাস্থি

সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি প্রথম অংশ হলো তরুনাস্থি  যা অস্থি প্রান্তকে আবৃত করে রাখে। সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধিতে তরুণাস্থি বিদ্যমান থেকে অস্থির অগ্রভাগ ঘর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করে । 

খ) সাইনোভিয়াল রস

সাইনোভিয়াল রস হল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি এর মধ্যে থাকা এক ধরনের তরল যা অস্থির ঘর্ষণজনিত  ক্ষয় হ্রাস করে।

 গ) ক্যাপসুল 

ক্যাপসুল হল অস্থিসন্ধি কে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখার জন্য অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বেষ্টিত একটি মজবুত আবরণী। 



টেনডন

 মাংসপেশীর প্রান্তভাগ দড়ি বা রজ্জুর মত শক্ত হয়ে অস্থির গায়ের সাথে সংযুক্ত হয় । এই শক্ত প্রান্তকে ট্যান্ডন বলে। টেনডন ঘন, শ্বেত তন্তুময় যোজক টিস্যু দিয়ে গঠিত ।এ ধরনের টিস্যুর ম্যাট্রিক্সে শ্বেততন্তু ছড়ানো থাকে । টেন্ডনের স্থিতিস্থাপকতা অনেক কম, তবে অনেক শক্ত তাই ভেঙ্গে বা ছিড়ে যবার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে ।

টেনডনের কাজ

১.  টেনডন পেশি প্রান্তে রজ্জুর মত শক্ত হয়ে অস্থির সাথে সংযুক্ত থাকে ।

২. টেনডন পেশী অস্থির সাথে আবদ্ধ হয়ে দেহ কাঠামো গঠনে, দৃঢ়তা দানে,  অস্থিবন্ধনী গঠনে ও চাপটানের বিরুদ্ধে যান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে ।

অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট

পাতলা কাপড়ের মত কোমল অথচ দৃঢ় স্থিতিস্থাপক যে বন্ধনী দিয়ে অস্থিগুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে তাকে অস্থি বন্ধনী বা লিগামেন্ট বলে । লিগামেন্টস শ্বেততন্তু ও পীততন্তু  এই দুই ধরনের তন্তু দিয়ে গঠিত ।লিগামেন্টের স্থিতিস্থাপকতা তুলনামূলকভাবে বেশি। কারণ এর তন্তুগুলো ইলাস্টিন নামক আমিষ দ্বারা তৈরি ।

অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্টের কাজ

১. অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট হাড় বা অস্থিকে পেশীর সাথে আটকে রাখে ।

২. লিগামেন্ট হাড় গুলোকে স্থানচ্যুত বা বিচ্যুতি হতে দেয় না ।

 

টেনডন ও লিগামেন্ট এর তুলনাঃ

১. গঠনঃ  টেনডন দড়ি বা রজ্জুর মত শক্ত কিন্তু লিগামেন্ট পাতলা কাপড়ের মত কোমল অথচ দৃঢ়।

২.স্থিতিস্থাপকতাঃ টেনডনের স্থিতিস্থাপকতা অনেক কম কিন্তু লিগামেন্টের স্থিতিস্থাপকতা অনেক বেশি ।

৩. তন্তুঃ টেনডন শ্বেততন্তুময়  টিস্যু দিয়ে গঠিত আর লিগামেন্ট শ্বেততন্তু ও পীততন্তু এই দুই ধরনের তন্তুু  দিয়ে গঠিত।

৪. কাজঃ টেনডন পেশীপ্রান্তে রজ্জুর মত শক্ত হয়ে অস্থির সাথে সংযুক্ত থেকে দেহ কাঠামো গঠনে, দৃঢ়তা দানে সাহায্য করে ।অপরদিকে লিগামেন্ট অস্থিকে পেশীর সাথে আটকে রেখে অস্থিগুলোকে স্থানচ্যুত বা বিচ্যুত হতে দেয় না ।



পেশীতন্ত্র

 যে তন্ত্র জীবের আভ্যন্তরীণ অঙ্গ ও বিভিন্ন ধরনের পেশি নিয়ে গঠিত তাকে পেশিতন্ত্র বলে। এই তন্ত্র বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। যেমন –

১. অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন, চলাফেরায় সহায়তা ,অঙ্গবিন্যাস ও ভারসাম্য রক্ষা করা ।

২. কঙ্কালতন্ত্রের সাথে যৌথভাবে দেহের নির্দিষ্ট আকার গঠন করা। 

৩. পেশিতে গ্লাইকোজেন সঞ্চয় করে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা ।

৪. বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হৃদপেশি হৃদপিন্ডের স্পন্দন ও রক্ত সঞ্চালন এর কাজ করা ।

৫. মূত্রত্যাগ, পরিপাক নালীর মধ্য দিয়ে খাদ্যবস্তুর চলন প্রভৃতি কাজে ভূমিকা পালন করা। 

Rabaya Bashri: Rabaya Bashri is a Lecturer with 14 years of teaching experience in biological science. Just after complete her M.Sc (Botany) she joined teaching profession. Having First Class all through her educational life she never seek for other job. She served most renowned school and colleges in Dhaka and Narayangonj city.