বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ হরমোন ফটোট্রপিক চলন, ফেরোমেন

বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ হরমোন ফটোট্রপিক চলন, ফেরোমেন-

ফটোট্রপিক চলন বা ফটোট্রপিজম

 উদ্ভিদের কান্ড এবং শাখা প্রশাখা সবসময় আলোর দিকে এবং মূল সবসময় আলোর বিপরীত দিকে চলন হওয়ার প্রক্রিয়াকে ফটোট্রপিক চলন বা ফটোট্রপিজম বলে । ফটোট্রপিক চলন এক ধরনের বক্র চলন ।

প্রাণী দেহে হরমোনের গুরুত্ব বা প্রভাব

 প্রাণীর প্রয়োজনীয় সমন্বয় কাজ নাই এছাড়াও হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয়। নিচে প্রাণী দেহে হরমোনের গুরুত্ব বা প্রভাব আলোচনা করা হলো –

১. হরমোন উত্তেজক বা  নিস্তেজক হিসেবে দেহের পরিস্ফুটন, বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন টিস্যুর কার্য নিয়ন্ত্রণ করে। 

২. হরমোন অতি অল্প পরিমাণে নিঃসৃত হয় বিশেষ বিশেষ শারীরবৃত্তীয় কাজ বা পদ্ধতি সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। 

৩. ব্যক্তির আচরণ, স্বভাব এবং আবেগপ্রবণতার উপর হরমোনের প্রভাব রয়েছে।

৪. জীবনের কর্মকাণ্ডে সমন্বয় সাধনে নানা প্রাণী হরমোন ব্যবহার হয় । যেমন- ফেরোমন। এই হরমোনের সাহায্যে পিঁপড়া খাদ্যের উৎস খোঁজ পায়, পতঙ্গ তার স্বপ্রজাতির সঙ্গীকে খুঁজে পায় আবার অনিষ্টকারী পোকা দমনে ও  একে ব্যবহার করা হয় ।

ফেরোমন

 পিঁপড়া খাদ্যের খোঁজ পেলে খাদ্যের উৎস থেকে বাসায় আসার পথে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত করে, এই হরমোন কে ফেরোমন বলে। এর ওপর ভিত্তি করে অন্য  পিঁপড়াগুলোও খাদ্য উৎসে যায় এবং খাদ্য সংগ্রহ করে বাসায় ফিরে আসে।কোন কোন পতঙ্গ ফেরোমোন দিয়ে তার স্বপ্রজাতির সঙ্গীকে খুঁজে পেতে পারে । অনিষ্টকারী পোকা দমনে ও ফেরোমোনের প্রভাব রয়েছে ।

হরমোন কে রাসায়নিক দূত বলা হয় কেন

হরমোন অতি অল্প পরিমাণে নিঃসৃত হয় জীবদেহের বিশেষ বিশেষ শারীরবৃত্তীয় কাজ বা পদ্ধতি সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করে । এরা উত্তেজক বা রোধক হিসেবে পরিস্ফুটন, বৃদ্ধি ও বিভিন্ন টিস্যুর কার্য নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যক্তির আচরণ, স্বভাব ও আবেগপ্রবণতার উপর ও হরমোনের প্রভাব অপরিসীম। এগুলো রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত  হয়ে উৎপত্তিস্থল থেকে দূরবর্তী কোষ বা অঙ্গ কে উদ্দীপ্ত করে। এজন্য এদের কে রাসায়নিক দূত হিসেবে অভিহিত করা হয় ।

জীবে স্নায়বিক প্রভাবে বিভিন্ন অঙ্গের কাজের সমন্বয়

বাহ্যিক পরিবেশের উদ্দীপক আলো, গন্ধ, স্বাদ এবং স্পর্শ এগুলো আমাদের চোখ, কান, নাক, জিহ্বা এবং ত্বকের অনুভূতিবাহী স্নায়ুপ্রান্তে উদ্দেপনা জাগায়। আবার অভ্যন্তরীণ পরিবেশের  উদ্দীপক চাপ, তাপ এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু অভ্যন্তরীণ অঙ্গের কেন্দ্রমুখী প্রান্তে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। এই দুই ধরনের উদ্দীপক কেন্দ্রমুখী স্নায়ুতে তারণার সৃষ্টি করে। এই তারণা মস্তিষ্কে পৌঁছে,মস্তিষ্ক সিদ্ধান্ত নিয়ে মোটর স্নায়ু এর মাধ্যমে পেশী বা গ্রন্থিতে সাড়া জাগায় এবং কোন কাজ করতে সাহায্য করে।

স্নায়ুতন্ত্র

যে তন্ত্রের সাহায্যে প্রাণী উত্তেজনায় সাড়া দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে, দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সংযোগ রাখে তাদের কাজে শৃঙ্খলা আনে এবং শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে ।

এক কথায় বলা যায় যে,

”যে তন্ত্র দেহের বিভিন্ন অঙ্গ এবং তন্ত্রের মধ্যে সমন্বয় করে দেহের বিভিন্ন অংশে উদ্দীপনা বহন ও সাড়া দান করে তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে  “

স্নায়ুতন্ত্রের দুটি ভাগে বিভক্ত- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র এবং প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র

 যে স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জু বা সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে গঠিত তাকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বলে।

প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র

 মস্তিষ্ক থেকে ১২জোড়া এবং মেরুরজ্জু থেকে ৩১ জোড়া স্নায়ু বের হয়ে সুক্ষ থেকে সুক্ষতর শাখায় বিভক্ত হয়ে সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, এগুলোকে একত্রে স্নায়ুতন্ত্র বলে।

স্নায়ুতন্ত্রের কাজ

১.  স্নায়ুতন্ত্রের প্রাণী উত্তেজনায় সাড়া দেয়।

২.  দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সংযোগ রাখে।

৩.  দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

৪.  স্নায়ুতন্ত্র প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে দেহের সম্পর্ক রক্ষা করে ।

৫.  জীবের দৈহিক,  মানসিক ও শারীরবৃত্তীয় কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।

Rabaya Bashri: Rabaya Bashri is a Lecturer with 14 years of teaching experience in biological science. Just after complete her M.Sc (Botany) she joined teaching profession. Having First Class all through her educational life she never seek for other job. She served most renowned school and colleges in Dhaka and Narayangonj city.