নিষেক প্রক্রিয়া

উদ্ভিদের নিষেক  ও দ্বি-নিষেক

যৌন প্রজননে শুক্রাণু বা পুংগ্যামেট ও ডিম্বাণু স্ত্রীগ্যামেটের মিলনকে নিষেক বলে । 

উদ্ভিদে প্রায় একই সময়ে দুটি পুংজননকোষ এর একটি ডিম্বাণু এবং অপরটি গৌণ নিউক্লিয়াস এর সাথে মিলিত হয় এ ঘটনাকে দ্বিনিষেক বলা হয়। 

নিষেক প্রক্রিয়া 1

ডিম্বকের গঠন

জাইগোট

পুং ও স্ত্রী গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে সৃষ্ট ডিপ্লয়েড অবস্থায়ই হল জাইগোট। 

শস্য

 দ্বিনিষেক এর সময় একটি পুং গ্যামেট ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয় আবার আরেকটি পুং গ্যামেট একই সাথে ডিপ্লয়েড গৌণ নিউক্লিয়াস এর সাথে যুক্ত হয় এবং ট্রিপ্লয়েড শস্য উৎপন্ন করে। 

নিষেক প্রক্রিয়া

নিষেক

নিষেক

পরাগায়নের ফলে পরাগরেণু স্ত্রীর স্তবকের গর্ভমুন্ড এর তরল পদার্থ শোষণ করে প্রস্ফুটিত হয়।  পরাগরেণুর অভ্যন্তরের নালী কোষটি পরাগরন্ধ্র পথে পরাগনালিকা তৈরি করে এতে প্রবেশ করে ।পরবর্তীতে জনন কোষটিও পরাগনালিকা এ প্রবেশ করে এবং বিভাজিত হয়ে দুটি করে। পরাগনালিকা টি গর্ভমুণ্ড হতে গর্ভদন্ড বেয়ে গর্ভাশয় প্রবেশ করে ডিম্বকের অভ্যন্তরে পুং গ্যামেট দুটি নিক্ষেপ করে । প্রায় একই সময়ে দুটি পুংগ্যামেটের একটি ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয়ে নিষেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এবং অপর পুং গ্যামেট গৌণ নিউক্লিয়াস এর সাথে মিলিত হয় দ্বিনিষেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে । নিষেকের ফলে ডিপ্লয়েড (2n) জাইগোট সৃষ্টি হয় এবং দ্বিনিষেক এর ফলে ট্রিপ্লয়েড  (3n) শস্য কোষে পরিণত হয়। পরবর্তীতে ডিম্বক টি শস্য ও ভ্রুনসহ বীজে পরিণত হয় ।

ফল

 নিষিক্ত করনের পর গর্ভাশয় এককভাবে অথবা ফুলের অন্যান্য অংশসহ পরিপুষ্ট হয়ে যে অঙ্গ গঠন করে তাকে ফল বলে ।

প্রকৃত ফলঃ  ফুল শুধু গর্ভাশয় ফলে পরিণত হলে তাকে প্রকৃত ফল বলে । যেমন – আম, জাম ইত্যাদি।

অপ্রকৃত ফলঃ গর্ভাশয় সহ ফুলের অন্যান্য অংশ পুষ্ট হয়ে যখন ফলে পরিণত হয়, তখন তাকে অপ্রকৃত ফল বলে।  যেমন- আপেল, চালতা ইত্যাদি।

নিষেকের তাৎপর্য/ পরিণতি

 ফুলের পরাগায়ন এর ফলে পুংজননকোষ ডিম্বানুর সাথে মিলিত হয়ে নিষেধ ঘটায়।  নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষে ফল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, এ প্রক্রিয়া গর্ভাশয় ধীরে ধীরে ফলে এবং ডিম্বক গুলো বীজে পরিণত হয় । এরপর পরিপক্ক ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে সেগুলো বপন করলে নতুন চারা উদ্ভিদের জন্ম হয়। আবার ফল খাদ্য পুষ্টির যোগান দেয় । জীব জগতের সকল প্রাণীই খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রজাতির উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে ।অন্যদিকে বীজের অঙ্কুরোদগম এর মাধ্যমে জীবের পরবর্তী পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। তাই বলা যায়,  নিষেক জীবজগতের টিকে থাকার নিয়ামক অর্থাৎ নিষেক ক্রিয়া সম্পন্ন না হলে জীবের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেত ।

প্রাণীর নিষেক

যৌন প্রজননে ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর মিলন কে নিষেক বলে। নিষেক  দুই ধরনের- যথা-বহিঃনিষেক ও অন্তঃনিষেক।

বহিঃনিষেক

যে নিষেকক্রিয়া প্রাণী দেহের বাইরে সংঘটিত হয় তাকে বহিঃনিষেক বলে।  এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন -বিভিন্ন  ধরনের মাছ , ব্যাঙ ইত্যাদি।

অন্তঃ নিষেক

 যে নিষেকক্রিয়া প্রাণীর স্ত্রীদেহের জননাঙ্গের সংগঠিত হয় তাকে অন্তঃনিষেক বলে।  অন্তঃনিষেক মানুষসহ ডাঙ্গায় বসবাসকারী প্রাণীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।