এ পাঠে যা রয়েছে-
জেনেটিক কোড
জেনেটিক-কোড
জেনেটিক কোডের সংজ্ঞাঃ
নিউক্লিওটাইড বা নাইট্রোজেন বেসের যে গ্রুপ কোন অ্যামিনো এসিড এর সংকেত গঠন করে তাকে বংশগতি ও সংকেত বা জেনেটিক কোড বলে। কোড অর্থ গোপন সংকেত বা গোপন বার্তা। জেনেটিক কোডের মূল একক হল কোডন যা তিন অক্ষর বিশিষ্ট এর ভাষা সর্বদা একমুখী।
এক কথায় বলা যায় যে, “জীবের বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরকারী কোডকে বলা হয় জেনেটিক কোড”।
১৯৬৬ সালে জেনেটিক কোড এর সম্পূর্ণ অর্থ উদ্ধার হয় এবং এর জন্য নিরেনবার্গ ও হরগোবিন্দ খোরানা ১৯৬৮ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ।
জেনেটিক কোডের বৈশিষ্ট্যঃ
১. জেনেটিক কোড সর্বদা তিন অক্ষর বিশিষ্ট বা ট্রিপলেট কোড।
২. একটি কোড শুধু একটি অ্যামিনো এসিড নির্ধারণ করে।
৩. সকল জীবে নির্দিষ্ট একটি কোডন একই অর্থ বহন করে।
৪. একটি কোডের অক্ষর অন্য করে অন্তর্ভুক্ত হয় না।
৫. একাধিক কোড একটি অ্যামিনো এসিড নির্ধারণ করতে পারে।
৬. দুটি কোড এর মধ্যে অতিরিক্ত নিউক্লিওটাইড থাকে না। আবার সমাপ্তি কোডন না আসা পর্যন্ত অব্যাহতভাবে অ্যামিনো এসিড সংযুক্তি চলতে থাকে।
৭. শুরু ও সমাপ্তি কোড সুনির্দিষ্ট। AUG দ্বারা চেইন শুরু এবং UAA, UAG বা UGA দ্বারা চেইন সমাপ্ত হয় ।
কোডনঃ
জেনেটিক তত্ত্বের মূল একক হল কোডন । ডিএনএ তে অবস্থিত তিনটি করে নিউক্লিওটাইড এর একটি বিশেষ বিন্যাস বা ট্রাইনিউক্লিওটাইড এর অনুক্রম কে কোডন বলে।
ট্রিপলেট কোডঃ
জীবের বৈশিষ্ট্য স্থানান্তর কারী জেনেটিক কোড তিনটি অক্ষর বিশিষ্ট হয়। এই তিন অক্ষর বিশিষ্ট জেনেটিক কোড কে ট্রিপলেট কোড বলে।
সমাপ্তি কোডনঃ
৬৪ টি কোটের মধ্যে তিনটি কোট কোন অ্যামিনো অ্যাসিড শনাক্ত করে না । এদের উপস্থিতিতে প্রোটিন সংশ্লেষণ এর সমাপ্তি ঘটে। এই তিনটি কোচকে সমাপ্তি কোডন বলা হয়। যথা – UAA, UAG ও UGA ।
প্রারম্ভিক কোডনঃ
৬৪ টি কোড এর মধ্যে কেবল একটি কোড সর্বদা পলিপেপটাইড চেইন সংশ্লেষণ এর শুরুতে যুক্ত থাকে (মেথিওনিন- AUG)। এজন্য মেথিওনিন এর কোড AUG কে প্রারম্ভিক কোডন বা সূচনা কোডন বলে ।
এন্টিকোডনঃ
ট্রান্সলেশন এর সময় tRNA তে তিনটি নিউক্লিওটাইড এর যে ট্রিপলেট বা কোডন mRNA এর সম্পূরক ট্রিপলেটের সাথে বা কোডনের সাথে সংযুক্ত হতে পারে তাকে বলা হয় এন্টিকোডন।
জিনোমঃ
কোন প্রজাতির কোষে বিদ্যমান সকল ধরনের একসেট ক্রোমোজোমের সমষ্টিকে জিনোম বলে। জার্মান উদ্ভিদ বিজ্ঞানী হ্যান্স উইঙ্কলার ১৯২০ সালে সর্বপ্রথম জিনোম শব্দটি ব্যবহার করেন ।
প্রোটিনকে জিন এর ভাষা বলা হয় কেনঃ
জিন ডি এন এ তে অবস্থান করে । আর নির্দিষ্ট জিন নির্দিষ্ট এনজাইম তৈরির জন্য দায়ী । এনজাইম মানেই প্রোটিন এবং এনজাইম ও প্রোটিন অনু জিন কর্তৃক সৃষ্ট । এই প্রোটিনে 600 অ্যামিনো এসিড একটি নির্দিষ্ট সাজ অনুযায়ী সজ্জিত। অ্যামিনো এসিডের ভিন্ন ভিন্ন সাজ পদ্ধতির জন্যই বহু বৈচিত্র্যময় এনজাইম তৈরি হয় এবং এক একটি এনজাইম এক একটি সুনির্দিষ্ট জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার জন্য দায়ী। তাই প্রোটিন কে বলা হয় জীবনের ভাষা ।
জিনের কাজঃ
১. জিনের টাইপ অনুসারে প্রোটিন, এনজাইম বা হরমোন তৈরি হয় , যা জীবের রাসায়নিক ও বিপাকীয় চরিত্র কে নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ ফিনোটাইপ নিয়ন্ত্রণ করে।
২. বংশগতীয় বৈশিষ্ট্যের একক হিসেবে জিনগুলো পরবর্তী প্রজন্মের সঞ্চালিত হয়।
৩. প্রজাতির বৈশিষ্ট্যকে সংরক্ষণের মাধ্যমে স্বতন্ত্রতা ধরে রাখে আবার মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায় ।