খাদ্য সংরক্ষন ও খাদ্যে ভেজাল

খাদ্য সংরক্ষন ও খাদ্যে ভেজাল

খাদ্য সংরক্ষণ

 যে প্রক্রিয়ায় খাদ্য পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের সংক্রমণ ও চর্বিজাতীয় অংশের জারণ বন্ধ করা হয় তাকে খাদ্য সংরক্ষণ বলে। মূলত খাদ্য সংরক্ষণ এমন একটি প্রক্রিয়া, যেটি খাদ্যের পচন রোধ করে, যার ফলে খাদ্যের গুনাগুন, গ্রহণযোগ্যতা এবং খাদ্যমান অটুট থাকে। যেমন- মাছ শুটকি করন, লোনা ইলিশ,  আচার, বরফ দিয়ে শীতলীকরণ, চিংড়ির নাপতে, মাছের সিদল এগুলো সবই খাদ্য ফলে ঐ সকল দ্রব্য খাদ্য হিসেবে গ্রহণের সংরক্ষণের বিভিন্ন প্রচলিত উপায়। সাধারণত সোডিয়াম নাইট্রেট, সোডিয়াম ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম এপারনেট, সালফার-ডাই-অক্সাইড, সোডিয়াম বাই সালফেট, সোডিয়াম বেনজোয়েট, সরবেট ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে অনুমোদিত রাসায়নিক পদার্থ।

খাদ্য-সংরক্ষন-ও-খাদ্যে-ভেজাল

খাদ্যে ভেজাল

 অনৈতিকভাবে খাদ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক ও অস্বাস্থ্যকর রাসায়নিক দ্রব্য ভেজাল ও রঞ্জক পদার্থ হিসেবে ব্যবহার করাকে খাদ্যে ভেজাল বলে। খাদ্যে ভেজালের কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন। খাদ্যে ভেজাল দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক রং, অ্যান্টিবায়োটিক, কিট ও বালাইনাশক, ফরমালিন, হেভি মেটাল উল্লেখযোগ্য। এই সকল ভেজাল পদার্থ শিশুদের বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং নানা রকম জটিল রোগের উপসর্গ কারণসহ অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার জাতীয় রোগের সৃষ্টি করে। 

খাদ্যে ভেজালের ক্ষতিকারক দিক

খাদ্যে ভেজালের ফলে জনসাস্থ এখন হুমকির সম্মুখিন। সম্মুখীন নিচে খাদ্য ভেজাল এর ক্ষতিকারক দিক সমূহ দেওয়া হল-

১. বিভিন্ন ধরনের খাদ্য যেমন – আইসক্রিম, লজেন্স, বেগুনি, বড়া ইত্যাদিতে কাপড়ের বাণিজ্যিক ব্যবহারের ফলে এ ধরনের খাবার আমাদের যকৃতের কার্যকারিতা নষ্ট করে এবং নানাবিধ রোগের কারণ হয়ে যায়। 

২. মাছ, গৃহপালিত পশু ও হাঁস-মুরগি কে অননুমোদিত দ্রব্য দিয়ে তৈরি খাদ্য খাওয়ালে এবং সেই মাছ, মাংস খেলে মানব শরীরে বিভিন্ন জটিল রোগের উপসর্গ দেখা দেয় ।

৩. ফরমালিনে ডোবানো মাছ, ফল ও অন্যান্য খাদ্য দ্রব্য টাটকা থাকলেও এগুলো মাছের কোষের সাথে যৌগ তৈরি করে যা থেকে যায় স্থায়ীভাবে। ফলে ঐ সকল দ্রব্য খাদ্য হিসেবে গ্রহণের ফলে ক্যান্সার জাতীয় রোগের সৃষ্টি হয়। 

৪. মজুদ খাদ্য এবং শাক সবজিতে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।  যা পরবর্তীতে বিষাক্ততার সময় নষ্ট হবার আগেই বাজারজাত করা হলে তা শিশুদের বাড়ন্ত কোষে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ফলে, একদিকে যেমন শিশুর মনের বিকাশ ব্যাহত হয় তেমনি নানারকম অসুস্থতায় ভোগে । 

৫.মাত্রাতিরিক্ত কার্বাইড ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ কাঁচা ফল ও টমেটো পাকাতে ব্যবহার করলে এগুলো গ্রহণের ফলে মানব দেহের বিভিন্ন জটিল রোগের সৃষ্টি করে।

পরিপাক

যে প্রক্রিয়ায় মানবদেহে খাদ্যকে শোষণ যোগ্য ও কোষ উপযেগী করতে তা ভেঙে সহজ, সরল ও তরল অবস্থায় রূপান্তর করা হয় তাকে পরিপাক বলে। যথা-যান্ত্রিক পরিপাক ও রাসায়নিক পরিপাক। 

পরিপাক বা পৌষ্টিকতন্ত্র

যে যন্ত্রের সাহায্যে খাদ্যদ্রব্য ভেঙে দেহের গ্রহণ উপযোগী উপাদানে পরিণত ও শোষিত হয় তাকে পৌষ্টিকতন্ত্র বলে। এ যন্ত্রটি পৌষ্টিক নালী এবং কয়েকটি গ্রন্থ নিয়ে গঠিত হয়। পৌষ্টিক নালী মুখ থেকে শুরু হয়ে পায়ুতে শেষ হয়।

পৌষ্টিক নালী

মুখগহ্বর থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত বিস্তৃত কোথাও শুরু আবার কোথাও প্রশস্ত নালিপথ কে পৌষ্টিক নালী বলে।  এর প্রধান অংশগুলো হলো-

১. মুখ

২. মুখগহ্বর

৩. দাঁত

৪. গলবিল

৫. অন্নণালী

৬. পাকস্থিলী

৭. অন্ত্র

৮. পায়ু

পৌষ্টিক গ্রন্থি

যেসব গ্রন্থের যথার্থ পরিপাকে অংশ নেয় তাদেরকে পৌষ্টিক গ্রন্থি বা পরিপাক গ্রন্থি বলে। মানব দেহের পৌষ্টিক গ্রন্থি গুলো হল-

১.  লালাগ্রন্থি

২.  যকৃৎ

৩.  অগ্ন্যাশয়

৪.  গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি

৫.  আন্ত্রিক গ্রন্থি 

এ অধ্যায়ের অন্যান্য পাঠ-

# উদ্ভিদের পুষ্টিতে বিভিন্ন খনিজ উপাদানের ভূমিকা

# খাদ্য উপাদান

খাদ্য উপাদান-খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, খনিজ লবণ,পানি ও খাদ্যআঁশ বা রাফেজ

পুষ্টির অভাবজনিত রোগ সমূহ

# ক্যালরি ও ক্যালরি নির্ণয়

# BMR ও BMI নির্নয়

Rabaya Bashri: Rabaya Bashri is a Lecturer with 14 years of teaching experience in biological science. Just after complete her M.Sc (Botany) she joined teaching profession. Having First Class all through her educational life she never seek for other job. She served most renowned school and colleges in Dhaka and Narayangonj city.