স্নায়ুবিক বৈকল্য জনিত শারীরিক সমস্যা -সমূহ হল-প্যারালাইসিস, এপিলেপসি, পারকিনসন রোগ।
এ পাঠে যা রয়েছে-
প্যারালাইসিস
শরীরের কোন অংশের ঐচ্ছিক পেশী ইচ্ছামত নাড়াতে পারার ক্ষমতা নষ্ট হওয়াকে প্যারালাইসিস বলে।
প্যারালাইসিস এর কারণ
প্যারালাইসিস সাধারণত স্ট্রোকের কারণে হয়। এছাড়া মেরুদণ্ড বা সুষুম্নাকাণ্ডের আঘাত বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে কিংবা স্নায়ুরোগ বা কশেরুকা ক্ষয় রোগের কারণেও প্যারালাইসিস হতে পারে।
প্যারালাইসিসের লক্ষণ
# শরীরের একপাশে কোন অঙ্গ বা উভয় পাশের অঙ্গের কার্যকারিতা নষ্ট হয়, যেমন- দুই হাত ও পায়ের প্যারালাইসিস।
# মস্তিষ্কের কোন অংশের ক্ষতির কারণে ওই অংশের সংবেদন গ্রহণকারী পেশীগুলোর কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।
প্যারালাইসিস এর চিকিৎসা / প্রতিকার
# চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ফিজিওথেরাপি, ইলেক্ট্রো থেরাপি ও ব্যায়াম করানোর ব্যবস্থা করতে হবে ।
# নিয়মিত ঔষধ ও পথ্য গ্রহণ করতে হবে।
প্যারালাইসিস এর প্রতিরোধ
# ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
# ধুমপান বা মাদকদ্রব্য পরিহার করতে হবে ও উত্তেজিত হওয়া যাবে না।
# যাবেনা পরিমিত সুষম খাবার খেতে হবে এবং চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
এপিলেপসি
মস্তিষ্কের যে রোগ আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে খিঁচুনি বা কাপুনি দিতে থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে রোগী অজ্ঞান হয়ে পড়ে তাকে এপিলেপ্সি বা মৃগীরোগ বলে।
এপিলেপসি রোগের কারণ
এপিলেপসি মূল কারণ এখনো সম্পূর্ণ ভাবে জানা যায়নি। স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের এপিলেপ্সি হতে পারে, অথবা মাথার আঘাতের কারণে মেনিনজাইটিস, এনসেফালাইটিস, জন্মগত মস্তিষ্ক বিকৃতি, টিউমার ইত্যাদি কারণে হতে পারে।
এপিলেপসি রোগের লক্ষণ সমূহ
# হঠাৎ খিঁচুনি বা শরীর কাপুনি দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া।
# আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ করে সাময়িকভাবে কার্যক্ষমতা হারায়।
# রোগে আক্রান্ত অবস্থায় রোগী কোথাও পড়ে গেলে রোগী নিজ শক্তিতে উঠতে পারে না। এজন্য এসব রোগীকে জলাশয় বা আগুন বিপদজনক বস্তু হতে দূরে রাখতে হয়।
এপিলেপসি প্রতিকার/ চিকিৎসা
# রোগীর কাপ নিবা খিঁচুনি হলে তার শরীর থেকে বেল্ট, টাই, বা শক্ত পোষাক ঢিলে করে দিতে হবে এবং চশমা থাকলে সরিয়ে দিতে হবে।
# খিঁচুনি বন্ধ হলে রোগীকে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে, যাতে সে সহজে শ্বাস নিতে পারে।
#চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ঔষধ সেবন করতে হবে। কোন অবস্থাতেই হাতুড়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। এতে রোগীর উপকার না হয়ে ক্ষতি হবে।
পারকিনসন রোগ
মস্তিষ্কের এমন এক অবস্থা যেখানে হাত ও পায়ের কাঁপুনি হয় এবং আক্রান্ত ব্যক্তির নড়াচড়া হাটাহাটি করতে সমস্যা হয় তাকে পারকিনসন বলে। এ রোগ সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পরে হয়।
পারকিনসন রোগের কারন
মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষের রাসায়নিক পদার্থ ডোপামিন তৈরি না হবার কারণে পারকিনসন রোগ হয়।
পারকিনসন রোগের লক্ষন
# প্রাথমিক অবস্থায় রোগী হালকা হাত বা পা কাপা অবস্থায় থাকে
# চোখের পাতার কাঁপুনি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, সোজাসুজি হাঁটার সমস্যাসহ চলাফেরা বিঘ্নিত হওয়া। ঘ্রাণ শক্তি হারিয়ে ফেলা।
# কথা বলার সময় মুখের বাচনভঙ্গি না আসা অর্থাৎ অর্থাৎ মুখ অনড় থাকা মাংসপেশিতে টান পড়া বা ব্যথা হওয়া, নড়াচড়ায় কষ্ট হওয়া, স্মৃতিশক্তি কমতে থাকা।
পারকিনসন রোগের প্রতিকার / চিকিৎসা
# ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি গ্রহণ করতে হবে।
# পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং সুশৃংখল জীবনযাপন করার মাধ্যমে রোগী অনেকটা সুস্থ থাকে ।
# ভিটামিন বি ও সি যুক্ত খাবার বা ঔষধ সেবনে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।