অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন, পদ্ধতি ও এর গুরুত্ব

কোষ বিভাজনঃ

যে প্রক্রিয়ায় একটি জীব কোষ বিভাজিত হয় একাধিক কোষের সৃষ্টি করে তাকে কোষ বিভাজন বলে। ওয়াল্টার ফ্লেমিং 1882 সালে সামুদ্রিক সালামান্ডার এর কোষে প্রথম কোষ বিভাজন লক্ষ করেন ।

অপত্য কোষঃ

কোষ বিভাজনের ফলে সৃষ্ট নতুন করে বলা হয় অপত্য কোষ। 

মাতৃকোষঃ 

যে কোষের বিভাজনের ফলে নতুন করে সৃষ্টি হয় তাকে  মাতৃকোষ বলে। 

 

কোষ বিভাজনের প্রকারভেদঃ 

কোষ বিভাজন তিন ধরনের যথা-

১.  অ্যামাইটোসিস

 ২. মাইটোসিস

 ৩. মিয়োসিস 

১.  অ্যামাইটোসিসঃ

এককোষী বা অনুন্নত অথবা নিম্নশ্রেণির জীব এ ধরনের কোষ বিভাজন হয় । যেমন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক,  অ্যামিবা ইত্যাদি। 

২. মাইটোসিসঃ

বহুকোষী বা উন্নত অথবা উচ্চশ্রেণীর জীবদেহে ধরনের কোষ বিভাজন হয়।  যেমন – সকল বহুকোষী জীব যেমন আম গাছ , ধান ইত্যাদি।

৩. মিয়োসিসঃ

বহুকোষী উন্নত অথবা উচ্চশ্রেণীর জীবের জনন কোষে ধরনের কোষ বিভাজন হয়ে থাকে।  বাঘ, হরিন ইত্যাদি।



অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনঃ

যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম কোন জটিল মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাড়াই সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে ।

প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজনঃ

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের ক্ষেত্রে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম কোন জটিল মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাড়াই সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি সমান বা অসমান অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। আর এ কারণেই অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলা হয়। 

 

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতিঃ

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের সময় মাতৃকোষের মধ্যাকার নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম লম্বা হয়ে ডাম্বেলের আকার ধারণ করে এবং মাঝ বরাবর সংকুচিত হয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন বা পৃথক হওয়া শুরু করে । একই সাথে মাতৃকোষের প্রাচীর সাইটোপ্লাজমসহ সংকুচিত হয়ে রিং আকারের খাঁজ  সৃষ্টি করে। খাঁজটি ক্রমশ গভীর হতে থাকে এবং নিউক্লিয়াসসহ সাইটোপ্লাজম দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষে পরিণত হয় । পরবর্তীতে প্রতিটি অপত্য কোষ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে মাতৃকোষের আকার ধারণ করে। 

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতি

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতি

 

মাইটোসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্বঃ

১. মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে নিম্নশ্রেণির তার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। যেমন অ্যামিবা ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি।

২. কোন জটিল প্রক্রিয়া ছাড়াই এই কোষ বিভাজন ঘটে বলে নিম্নশ্রেণির জীবের বৃদ্ধি এবং বংশগতিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। 

৩. নিউক্লিয়াস, ক্রোমোজোম ও সাইটোপ্লাজম এর সমতা রক্ষিত হওয়ায় অপত্য কোষের গুনাগুন মাতৃকোষের সমান  হয়।ফলে সৃষ্ট অপত্য কোষের বংশগতির ধারা রক্ষিত হয় ।

৪. বিজ্ঞানী স্ট্রাসবার্জারএর মতে অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় থেকে জটিল ও উন্নত কোষ বিভাজন পদ্ধতি উৎপত্তি হয়েছে।

৫. কোনো কোনো  এককোষী জীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ।