অস্থি ও তরুনাস্থি ।। অস্থি ও তরুণাস্থির পার্থক্য বা তুলনা

অস্থিঃ

অস্থিতিস্থাপক, কঠিন ও দৃঢ় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন যোজক কলার রূপান্তরিত রূপকে অস্থি বলে। এটি দেহের সর্বাপেক্ষা দৃঢ় কলা। অস্থি মূলত ফসফরাস সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম এর বিভিন্ন যৌগ দিয়ে তৈরি । অস্থিতে প্রায় 40-50% শতাংশ পানি থাকে 

 

তরুনাস্থিঃ

স্থিতিস্থাপক ও অপেক্ষাকৃত নরম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন যোজক কলার ভিন্নরূপ কে তরুনাস্থি বলে।  তরুণাস্থি পেরিকন্ড্রিয়াম নামক একটি তন্তুময় যোজক কলা নির্মিত আবরণী দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। তরুণাস্থি বিভিন্ন অস্থির সংযোগস্থলে কিংবা অস্থির কিছু অংশে উপস্থিত থাকে ।

অস্থি ও তরুণাস্থির পার্থক্য বা তুলনাঃ

১. অবস্থানঃ  অস্থি জীবদেহের অন্তঃকঙ্কাল এ অবস্থান করলেও তরুনাস্থি অবস্থান করে অস্থির সংযোগস্থলে পর্শুকার শেষপ্রান্তে, নাকে, কানে, সড়যন্ত্র প্রভৃতি স্থানে। 

২. গঠনঃ  অস্থি কঠিন ও অস্থিতিস্থাপক সংযোগ কলা কিন্তু তরুণাস্থি নরম স্থিতিস্থাপক সংযোগ কলা।

৩. আবরণঃ  অস্থি পেরিঅস্টিয়াম আবরণ দ্বারা আবৃত অপরদিকে তরুণাস্থি পেরিকন্ড্রিয়াম আবরণ দ্বারা আবৃত। 

৪. মাতৃকাঃ  অস্থির মাতৃকা কঠিন কোলাজেন তন্তু দ্বারা তৈরি কিন্তু তরুণাস্থির মাতৃকা ও অকঠিন কন্ড্রিন দ্বারা গঠিত ।

৫. কোষঃ অস্থি অস্টিওব্লাস্ট কোষ দ্বারা কিন্তু তরুনাস্থি কন্ড্রিওব্লাস্ট কোষ দ্বারা গঠিত।



অস্থিসন্ধি

 অস্থিসন্ধিঃ  দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে বলা হয় অস্থির সন্ধি। প্রতিটি অস্থিসন্ধির অস্থিগুলো স্থিতিস্থাপকতা রজ্জুর মতো বন্ধনী দিয়ে আটকানো থাকে, ফলে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল থেকে বিচ্যুত হতে পারেনা।  সন্ধিস্থল বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনে সাহায্য করে। 

 

অস্থি সন্ধির প্রকারভেদ / ধরণঃ

 অস্থিসন্ধি কয়েক ধরনের হয় । যথা –

১. নিশ্চল অস্থিসন্ধি (এগুলো নাড়ানো যায় না যেমন করোটিকার অস্থিসন্ধি) 

২. ঈষৎ সচল অস্থিসন্ধি( সামান্য নাড়ানো যায় যেমন -মেরুদন্ডের অস্থিসন্ধি )

৩. পূর্ণ সচল অস্থিসন্ধি  (সহজেই নাড়ানো যায় যেমন- সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি)

বল-ও-কোটর-সন্ধি-কব্জা-সন্ধি

বল-ও-কোটর-সন্ধি-কব্জা-সন্ধি

পূর্ণ সচল অস্থিসন্ধি দুই ধরনের

ক) বল ও কোটর সন্ধি (কাঁধ উরুসন্ধি)

খ)  কব্জা সন্ধি  (হাতের কনুই, জানু, আঙ্গুলের সন্ধি)